সেপ্টেম্বরেই খুলছে কলেজ ভার্সিটি, খুলছে না স্কুল

24 August 2021, 10:33:19

বিশ্বজুড়ে বয়ে চলছে করোনার ভয়াবহতা। প্রায় দু’বছর হতে চলেছে এ ভাইরাসের ফলে দিশেহারা হয়ে পড়েছে বিশ্বের প্রতিটি মানুষ। করোনার প্রভাব পুরো বিশ্বের মতো বাংলাদেশেও উল্লেখযোগ্য হারে লক্ষ্য করা গেছে। দেশেও এই প্রাণঘাতী ভাইরাসে প্রাণ হারিয়েছে হাজার হাজার মানুষ। শুধুই প্রাণ-ই নয়, এই ভাইরাসের ফলে দেশে সবচেয়ে বড় যে ক্ষতি হয়েছে, তা হলো দেশের শিক্ষাখাত। মহামারির কারণে প্রায় দুই বছর দেশের সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রেখেছে সরকার। তবে অনলাইন, টেলিভিশনসহ ডিজিটাল প্লাটফর্মে চলছে শ্রেণি কার্যক্রম। অবশ্য এতে সন্তুষ্ট নয় শিক্ষার্থী-অভিভাবকরা। তারা বিভিন্ন সময়ে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলার দাবি জানিয়ে আসছে আরও আগে থেকে। সংসদেও দাবি ওঠে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়ার। তবে আশার খবর, শেষ পর্যন্ত উন্মুক্ত হতে যাচ্ছে দেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের দ্বার। সেপ্টেম্বরের শেষে খুলে দেয়া হবে দেশের স্নাতক ও স্নাতকোত্তর পর্যায়ের কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়। চলবে সশরীরে ক্লাস-পরীক্ষা। তবে আরও বাড়ানো হবে প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্কুলের ছুটি।

দেশের একটি শীর্ষ গণমাধ্যমের প্রতিবেদনে প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ের একটি সূত্র জানিয়েছে, টিকা কার্যক্রম সম্পন্ন করে বন্ধ থাকা শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সেপ্টেম্বর থেকে খুলে দেওয়ার একটি পরিকল্পনা রয়েছে সরকারের। টিকা প্রদানের পাশাপাশি করোনা পরিস্থিতি কিছুটা নিয়ন্ত্রণের দিকে গেলেই সেপ্টেম্বরের শেষের দিকে পর্যায়ক্রমে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলে দিতে চায় সরকার।

ওই সূত্র আরও জানায়, প্রথমে পাবলিক ও প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়গুলো খুলে দিতে চায় সরকার। তারপরই কলেজগুলো খুলে দেওয়া হবে। তবে মাধ্যমিক ও প্রাথমিক স্তরের প্রতিষ্ঠান খুলতে আরও কিছু সময় নেওয়া হতে পারে। এই দু’টি স্তরে শিক্ষার্থী সংখ্যা বেশি এবং স্বাস্থ্যবিধির বিষয়ে তুলনামূলক কম সচেতন হওয়ায় মাধ্যমিক ও প্রাথমিক এই দু’টি স্তরের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলা নিয়ে সরকারের উচ্চ পর্যায়ের কিছুটা সংশয়ে রয়েছে। সেপ্টেম্বরে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলার বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর একটি নির্দেশনা শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে দেওয়া হয়েছে। তবে করোনা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের ওপর নির্ভর করবে এই নির্দেশনা।

প্রসঙ্গে শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি ওই গণমাধ্যমকে বলেন, এরমধ্যে অনেকেই ভ্যাকসিন নিয়ে নিতে পারবে হয়তো। তাতে ইউনিভার্সিটি আগে খোলা যেতে পারে। তারপরে কলেজগুলো। বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজগুলোতে শিক্ষার্থী সংখ্যা কম। সেখানে স্বাস্থ্যবিধি মানানো সম্ভব হবে হয়তো। মাধ্যমিক ও প্রাথমিক স্তরে শিক্ষার্থী সংখ্যা বেশি। ফলে স্কুল খোলা নিয়ে আমাদের ভীষণ ভাবতে হচ্ছে।

তিনি বলেন, আমরা যেভাবে প্ল্যান করেছিলাম সপ্তাহে একেকটা ক্লাস। সবাই একসঙ্গে আসবে না। ফলে এ রকম করা যেতে পারে। এখন তো বাচ্চারা ইফেক্টেড হচ্ছে। আমাদের তো নিচের দিকের ক্লাস সাইজ অনেক বড়। ঠাসাঠাসি অনেক বেশি। সামাজিক দূরত্ব মানানো যাবে না। স্কুলের বাচ্চাদের নিয়ে এখন দুশ্চিন্তাটা বেশি। আগে বাচ্চারা ইনফেক্টেড হচ্ছিল না, কিন্তু এখন হচ্ছে।

তিনি আরও বলেন, নভেম্বর ডিসেম্বর জানুয়ারিতে করোনাভাইরাস একেবারেই কমে গিয়েছিল। যদি এরকম কমে যায় তাহলে আমরা পরীক্ষা নেওয়ার কথা ভাবছি। আমরা ডেটও ঘোষণা করে দিয়েছি। সুতরাং তখন তো আমরা স্কুলও খুলবো। যদি ওই পর্যায়ে নেমে যায়।

শেষে মন্ত্রী বলেন, ভ্যাকসিন মজুত আছে। সেপ্টেম্বর পর্যন্ত অনেককে টিকা দেওয়া সম্ভব হবে, তাই ভাবছি নিয়ন্ত্রণ পর্যায়ে নামিয়ে নেওয়া সম্ভব হবে।

প্রতিছবি ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।