বিনোদন কেন্দ্র বন্ধ, আরও পানসে নগরবাসীর ঈদ আনন্দ

14 May 2021, 8:58:18

রাজধানীর ঈদ মানেই ফাঁকা ঢাকায় একটু ঘুরে বেড়ানো। যারা ঈদ উপলক্ষে ঢাকার বাইরে যাওয়ার সুযোগ পান না তারা যানজটমুক্ত রাজধানীতে ঘোরাঘুরি করে সেই শূন্যতাটুকু পূরণ করতে চান। কিন্তু এবার করোনা মহামারিকালের এই ঈদে সেই সুযোগও থাকলো না নগরবাসীর। এমনিতেই অনেক বিধিনিষেধের মধ্যে কাটাতে হচ্ছে ঈদ। এর মধ্যে রাজধানীর বিনোদন কেন্দ্রগুলো রয়েছে বন্ধ। অনেকে সেই খবর না জেনে বিভিন্ন বিনোদন কেন্দ্রে গিয়ে ফিরছেন হতাশ হয়েছে। এতে এবারের ঈদ আনন্দ আরও পানসে হয়ে গেছে বলে জানালেন তারা।

তবে কেউ কেউ বিকল্প হিসেবে রাজধানীর ফাঁকা রাস্তায় ঘোরাঘুরি করে কিংবা হাতিরঝিল-ধানমন্ডি লেকের মতো উন্মুক্ত স্থানে গিয়ে একটু রিফ্রেস হওয়ার চেষ্টা করছেন। আবার কেউ কেউ ইনডোর আনন্দ-বিনোদনের আয়োজন করেছেন।

শুক্রবার ঈদুর ফিতরের বিকালে রাজধানীর বিভিন্ন বিনোদন কেন্দ্র ঘুরে দেখা যায়, সব বিনোদন কেন্দ্রই বন্ধ রয়েছে। অনেকে না জেনে ঘুরতে এসে ফিরে যাচ্ছেন হতাশ হয়ে। পূর্ব সিদ্ধান্ত অনুযায়ী শাহবাগের জাতীয় জাদুঘর, রমনা পার্ক, লালবাগ কেল্লা, শ্যামলী শিশুমেলা, শাহবাগ জাতীয় শিশুপার্ক, মিরপুরের জাতীয় চিড়িয়াখানা বন্ধ রয়েছে। এসব বিনোদন কেন্দ্রের সামনে কিছুক্ষণ পরপরই দর্শনার্থীরা আসছেন। বিনোদন কেন্দ্রগুলো বন্ধ থাকায় বাধ্য হয়ে ফিরে যেতে হচ্ছে তাদের।

মিরপুর থেকে স্ত্রীকে নিয়ে রমনা পার্কে ঘুরতে এসেছিলেন সাইফুল ইসলাম। পার্কের ফটক বন্ধ থাকায় ঢুকতে পারেননি তারা। সেখান থেকে সিদ্ধান্ত নেন শাহবাগ জাদুঘরে যাওয়ার। জাদুঘরের সামনে এসে দেখেন এখানেও ফটকে তালা। দায়িত্বরত নিরাপত্তাকর্মীর সঙ্গে কথা বলে সাইফুল জানতে পারেন, করোনার কারণে জাদুঘর বন্ধ।

ঢাকা টাইমসের সঙ্গে আলাপকালে সাইফুল বলেন, ‘একটু ঘুরতে বের হয়েছিলাম। এত দূর থেকে আসছি। এসে দেখি সব বন্ধ। এখন এই রোদের মধ্যে কই যাই? পার্ক তো খোলা রাখতে পারত। আজ ঈদের দিন মানুষ একটু ঘোরাঘুরির সুযোগ পেত।’

একই স্থানে দুই সন্তানকে নিয়ে এসেছেন আজাহার উদ্দিন। উদ্দেশ্য ছেলেদের জাতীয় জাদুঘর দেখানো, ইতিহাস সম্পর্কে জানানো। তবে আজাহারের সে প্রত্যাশা পূরণ হয়নি। জাদুঘর বন্ধ। পরে ছেলেদের নিয়ে জাদুঘরের ফটকে সামনে সেলফি তুলে বিদায় নিতে হয়েছে তাদের।

এদিকে মিরপুর চিড়িয়াখানায় ঘুরতে আসা সালমান আলীও চিড়িয়াখানা বন্ধ থাকায় মনঃক্ষুণ্ন। সালমান বলেন, ‘ঈদের দিন ঘুরতে বেরিয়েছি। সাধারণত সবসময় ঘুরতে বের হওয়া হয় না। কিন্তু এসে দেখছি বন্ধ। আগে থেকে জানতাম না, জানলে আসতাম না।’

আগারগাঁও বিজ্ঞান জাদুঘরে ঘুরতে এসেও ফিরে গেছেন অনেকে। হতাশা নিয়ে ফিরে যেতে হয়েছে বঙ্গবন্ধু নভোথিয়েটারে ঘুরতে আসা দর্শনার্থীদেরও।

অনেককে নিয়ে নভোথিয়েটারে আসা ফারুক হোসেন ঢাকা টাইমসকে বলেন, ‘এত কষ্ট করে পরিবার নিয়ে ঘুরতে এলাম, কিন্তু এসে দেখছি বন্ধ। ভাবলাম ছুটির দিন রাস্তাঘাট ফাঁকা, এজন্য পরিবার নিয়ে ঘুরে আসি। কিন্তু এখন দেখছি খরচ করে আসাটাই বিফলে গেল।’

এসব বিনোদন কেন্দ্রের সামনে কিশোর ও তরুণদের পাশাপাশি দেখা মিলেছে শিশু ও মধ্যবয়সীদেরও। বিনোদন কেন্দ্রগুলো বন্ধ থাকায় বিকল্প হিসেবে তারা বেছে নিয়েছেন হাতিরঝিল, ধানমন্ডি লেক, সোহরাওয়ার্দী উদ্যান, ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্র (টিএসসি), বুড়িগঙ্গা, তুরাগ ও বালুনদীর তীর এবং এসব নদীর উপর থাকা সেতুকে। সেখানে একটু ঘোরাঘুরি এবং ছবি তুলে ঈদের স্বাদ কিছুটা উপভোগের চেষ্টা করছে নগরবাসী।

প্রতিছবি ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।