করোনা রোধে রোহিঙ্গা শিবিরসহ টেকনাফে ‘কঠোর লকডাউন’ চলছে

22 May 2021, 12:55:02

করোনাভাইরাসের সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় কক্সবাজারের সীমান্ত উপজেলা টেকনাফে ১০ দিন এবং উখিয়ার পাঁচটি রোহিঙ্গা ক্যাম্পসহ ফের কঠোর লকডাউনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে উপজেলা প্রশাসন।

সম্প্রতি কক্সবাজার জেলার এসব এলাকায় করোনাভাইরাসের সংক্রমণ বৃদ্ধি পাওয়ায় জনসাধারণের স্বাস্থ্য নিরাপত্তায় এ ধরনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে বলে সংশ্লিষ্ট প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে। শুক্রবার (২১ মে) লকডাউনের প্রথম দিন অতিবাহিত হয়েছে।

এছাড়া হঠাৎ করে রোহিঙ্গাদের মধ্যে করোনার সংক্রমণ বৃদ্ধি পাওয়ায় উখিয়া উপজেলার কুতুপালংয়ের পাঁচটি মেগা ক্যাম্পে আজ ২০ মে থেকে ৩১ মে পর্যন্ত ‘কঠোর লকডাউন’ ঘোষণা করা হয়েছে। এদিন টেকনাফ উপজেলায় এবং ৫টি রোহিঙ্গা ক্যাম্পে সব ধরনের যানবাহন চলাচল বন্ধ রয়েছে।

টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. পারভেজ চৌধুরী জানান, কক্সবাজার জেলা করোনা প্রতিরোধ কমিটির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী সীমান্ত উপজেলা টেকনাফে আজ (২১ মে) থেকে আগামী ৩০ মে পর্যন্ত লকডাউন ঘোষণা করা হয়েছে। করোনার সংক্রমণ বৃদ্ধি এবং রোহিঙ্গা অধ্যুষিত এলাকা হওয়ায় এই উপজেলায় কঠোরভাবে লকডাউনে থাকবে। এব্যাপারে রোহিঙ্গা ক্যাম্প গুলোতে এবং টেকনাফ উপজেলায় মািকিং করা হচ্ছে।

ইউএনও বলেন, ‘লকডাউন সময়ে কোন লোক টেকনাফ থেকে বাইরে এবং ভেতরে প্রবেশ করতে পারবে না। শুধু ওষুধের দোকান ব্যাতিত বিকেল পাচঁটা পর্যন্ত হাটবাজার ও দোকানপাট খোলা থাকবে। তবে দূরপাল্লার বাস বন্ধ থাকবে। পাশাপাশি জরুরী প্রয়োজন ছাড়া ঘর থেকে বের হওয়া যাবে না।’

শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসনের অতিরিক্ত কমিশনার মোহাম্মদ সামসুদ্দৌজা জানান, সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় টেকনাফের ২৪ নম্বর এবং উখিয়ার ২, ৩, ৪ ও ১৫ নম্বর ক্যাম্পে লকডাউন ঘোষণা করা হয়েছে। তিনি আরও জানান, ক্যাম্পে সব ধরনের কার্যক্রম বন্ধ রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তবে ওষুধ ও খাবারের কার্যক্রম চলমান থাকবে।

কক্সবাজার শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কার্যালয়ের প্রধান স্বাস্থ্যবিষয়ক কর্মকর্তা ডা. তোহা জানান, গতকাল ২০ মে পর্যন্ত ৪১ হাজার ৪৭৭ জন রোহিঙ্গার নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে। এতে ৯১৩ জন রোহিঙ্গার করোনা শনাক্ত হয়েছে। আর এ পর্যন্ত করোনা ভাইরাসে মৃত্যু হয়েছে ১২ জন রোহিঙ্গার।

তিনি জানান, এতদিন রোহিঙ্গা ক্যাম্পে করোনা পরিস্থিতি ভালো থাকলেও চলতি মে মাসে অবনতি হয়। গত ১৪ মে থেকে গতকাল ২০ মে পর্যন্ত এক সপ্তাহে ১৬৫ জন রোহিঙ্গার দেহে করোনা শনাক্ত করা হয়েছে। এতে রোহিঙ্গাসহ সংশ্লিষ্টদের মাঝে উদ্বিগ্নতা দেখা দেয়।

উল্লেখ্য, ২০১৭ সালের ২৫ আগস্টের পর মিয়ানমারের আরাকান রাজ্যে দেশটির সেনাবাহিনীর নির্যাতনের মুখে পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেয় সাত লাখেরও বেশি রোহিঙ্গা। এর আগেও বিভিন্ন সময়ে আশ্রয় নিয়েছিল চার লাখ রোহিঙ্গা। সব মিলিয়ে বর্তমানে উখিয়া ও টেকনাফের ৩৪টি আশ্রয় শিবিরে ১১ লাখের বেশি রোহিঙ্গা অবস্থান করছে।

প্রতিছবি ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।