সীতাকুণ্ডের ফৌজদারহাট-বায়েজিদ সংযোগ সড়ক বন্ধ

8 June 2021, 10:38:22

পাহাড় ধসের আশঙ্কায় চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডের ফৌজদারহাট-বায়েজিদ সংযোগ সড়কটি বন্ধ করে দিয়েছে সড়কটি নির্মানকারী প্রতিষ্ঠান চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ(সিডিএ)। সড়কটির দুই দিকে পাথর দিয়ে বন্ধ করার কাজ শুরু করেছে সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান স্পেক্ট্রা ইঞ্জিনিয়ার্স। সোমবার বিকেলে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সিডিএ’র প্রধান প্রকৌশলী হাসান বিন শামস্।

ফলে চট্টগ্রাম শহরের বাইরের এ সড়কটি দিয়ে দক্ষিণ চট্টগ্রাম কিংবা পার্বত্য অঞ্চলের যানবাহন সাময়িকভাবে চলাচল করতে পারছে না। ফলে এসব অঞ্চলের যানবাহনকে শহরের ভেতরের বিভিন্ন সড়ক ব্যবহার করে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে উঠতে হবে।এর আগে সড়কটি ব্যবহার করে চট্টগ্রাম নগরের বাইরে দিয়ে দক্ষিণাঞ্চলের যানবাহন ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক কিংবা বিমান বন্দরে আসা যাওয়া করত। তেমনি ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক থেকে দক্ষিণ চট্টগ্রাম, কক্সবাজার কিংবা পার্বত্য অঞ্চলে আসা-যাওয়া করত।

সংশ্লিষ্টরা জানান, সড়কটি নির্মান করা হয়েছে পাহাড় কেটে। যে পাহাড়গুলো কাটা পড়েছে তার বেশিরভাগ খাড়া ভাবে( ৯০ ডিগ্রি কোনে) কাটা হয়েছে। ফলে ভারি বৃষ্টিপাতে পাহাড় ধসে বড়ধরনের দুর্ঘটনা হতে পারে। যার ফলে সড়কটি বন্ধ করা জরুরী হয়ে পড়ে।

ফৌজদারহাট পুলিশ ও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান স্পেক্ট্রা ইঞ্জিনিয়ার্স জানিয়েছে, সড়কটির দুই পাশে সড়ক বন্ধের সাইনবোর্ড টাঙানো হবে। এছাড়া চট্টগ্রাম নগরের বায়েজিদ অংশের এশিয়ান ওইমেন ইউনিভার্সিটি এলাকায় ৫ নম্বর সেতুর পাশে ও সীতাকুণ্ড অংশের বেঙ্গল ব্রিকস এলাকায় তিন সারি ব্লক দিয়ে স্থায়ীভাবে বন্ধ করার কাজ চলছে।

ফৌজদারহাট পুলিশের পরিদর্শক শফিকুল ইসলাম বলেন, বর্ষার পাহাড় ধসের আশঙ্কা থেকে সিডিএ ফৌজদারহাট বায়েজিদ লিংক রোডটি বন্ধ করে দেওয়ার কাজ শুরু করেছে। আজ সোমবার দুপুরে তারা দুই লেন বন্ধ করেছে। বৃষ্টির পরিস্থিতি উন্নতি না হলে আগামিকাল মঙ্গলবার চারলেন পুরোপুরি বন্ধ করে দেবে বলে তাদের জানিয়েছে সিডিএ কর্মকর্তারা।

ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান স্পেক্ট্রা ইঞ্জিনিয়ার্স প্রকল্প ব্যবস্থাপক প্রকৌশলী রবিউল হক বলেন, বর্ষায় ভারি বর্ষনে খাড়া উচু পাহাড়গুলো ধসে পড়া আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। ফলে আজ থেকে আগামি সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সড়কটি বন্ধ করে দেওয়া হচ্ছে। এ প্রকৌশলী আরও বলেন, প্রায় ৩৩২ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত সড়কটি দৈর্ঘ্য ছয় কিলোমিটার। সড়কটির প্রাথমিক নির্মান কাজ শেষে চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে গাড়ি চলাচলের জন্য উন্মুক্ত করা হয়। প্রথম দিকে দুই লেন খুলে দেওয়া হয়। গাড়ি চলাচল বেড়ে যাওয়ায় চারলেন সড়কটি পুরোপুরি উন্মুক্ত করা হয়। কাল বৈশাখী শুরু হওয়ার পর আবারও দুই লেন বন্ধ করে দেওয়া হয়। এর আগে সড়কটি চার লেনের কাজ শুরু হয় ২০১৬সালে।

সিডিএ’র প্রধান প্রকৌশলী হাসান বিন শামস্ বলেন, সড়কটির কাজ পুরোপুরি শেষ হয়নি। এরই মধ্যে চট্টগ্রাম নগরের যানজট নিরসনে বৃহত্তর স্বার্থে সড়কটি খুলে দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু সড়কে থাকা ৩-৪টি পাহাড় অতিবর্ষণে ধসে পড়তে পারে। ফলে সিডিএ বিশেষজ্ঞদল পাহাড়গুলোকে স্থির করার জন্য আরও কিছু কাটার পরামর্শ দিয়েছে। কি পরিমান কাটতে হবে সে বিষয়ে বিশেষজ্ঞদের মরামর্শ তারা পরিবেশ অধিদপ্তরকে জানাবেন। এছাড়া কিছু পাহাড় এলাকায় রিটার্ণিং ওয়াল দিতে হবে। ফলে অসম্পন্ন কাজগুলো করার জন্য সড়কটি আজ থেকে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। আগামি সেপ্টেমরের দিকে সড়কটি যান চলাচলের জন্য আবারও উন্মুক্ত করে দেওয়া হবে।

এরআগে গত রোববার সন্ধ্যায় সড়কটির পাশে থাকা সীতাকুণ্ডের সলিমপুর ইউনিয়নের জঙ্গল সলিমপুর গ্রামের ঝুকিপূর্ণ পাহাড় থেকে ৩০ পরিবারকে নিরাপদ আশ্রয়ে সরিয়ে আনা হয়। ভারি বর্ষনে পাহাড় ধসের আশঙ্কা থেকে তাদের সরিয়ে আনে উপজেলা প্রশাসন।

প্রতিছবি ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।